Client: FAO
Project: Pesticide Risk Reduction
Awareness Video Script (Conversation style)
Duration: 8 min
Visual |
Audio |
দেখা
যাবে মুখে মাস্ক, এপ্রোনসহ পর্যাপ্ত সতর্কতা নিয়ে জমিতে কীটনাশক দিচ্ছে রবিউল। হঠাৎ
দূরে দেখে গাছের নিচে বসে কুদ্দুস মাথায় হাত দিয়ে বিড়বিড় করছে। এগিয়ে যায় রবিউল।
মাস্ক খুলে জিজ্ঞাসা করে, |
রবিউল: কী হইছে তোমার? কখন থাইকা দ্যাখতাছি
এখানে বইসা বিড়বিড় করতেছো! |
কুদ্দুস
দুই হাত দিয়ে নিজের মাথা চেপে ধরে আছে এবং হতাশ কন্ঠে বলে, |
কুদ্দুস: মাথাটা
ঝিমঝিম করতাছে আবার! এদিকে রাইত হইলেই পোলাটার শ্বাসের টান বাইড়া যায়। বাড়িতে একটার
পর একটা ঝামেলা লাইগাই আছে। |
রবিউল
এবার কুদ্দুসের পাশে বসে এবং বলে, |
রবিউল: জহিররে
(কুদ্দুসের ছেলে) তো সেদিনও দেখলাম বালাইনাশকের খালি বোতল দিয়া খেলতেছে। |
কাট টু কুদ্দুস
যেন রবিউলের কথার খুব একটা গুরুত্ব দেয় না। আবার বিড়বিড় করে বলতে থাকে সে। |
কুদ্দুস: বাড়িতে
একটা নতুন মেহমান আইব। এর মইধ্যে এতো অসুখ-বিসুখ, ঝামেলা। |
কাট টু রবিউল
কুদ্দুসের কাঁধে হাত দিয়ে বলে, |
রবিউল: তোমারে তো কইলাম ভাই, জমিতে
ক্ষতিকর রাসায়নিক
কম ব্যবহার করো। বিষাক্ত ঔষধের বোতল, ড্রাম এসব ঘরে রাইখ্যো না। তাহলেই আর কোন ঝামেলা থাকবো না। |
কাট টু কুদ্দুস
কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বলে, |
কুদ্দুস: বারবার কীসব কস, তুই? এগুলার সাথে আমার মাথা ব্যাথা
আর সংসারে ঝামেলার কী সম্পর্ক! জমিতে বালাইনাশক বেশি দিলে ফলন বাড়ে, এটা তো বাপ-দাদার
আমল থাইকা যাইনা আসতাছি। |
কাট টু কাট রবিউল
কুদ্দুসকে বলবে- এসময়
বিভিন্ন রেলেভেন্ট সিন দেখবো, যেমন: রবিউল
প্রশিক্ষণ সেন্টারে মনযোগ সহকারে ট্রেনিং নিচ্ছে, প্রশিক্ষক ট্রেনিং দিচ্ছে এবং রবিউলের
সাথে ট্রেনিং নিচ্ছে আরও কিছু কৃষক। |
রবিউল: এটা ভুল কথা, বরং উল্টাটাও হইতে পারে। কিছুদিন আগে আমি ট্রেনিং নিতে গেছিলাম প্রশিক্ষণ
সেন্টারে। তখন স্যারেরা বলছে
প্রয়োজনের অতিরিক্ত বালাইনাশক ব্যবহার ফসল ও জমির দুইটার-ই ক্ষতির কারণ। পরিবেশও নষ্ট হয়। |
কাট টু কুদ্দুস
রবিউলকে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করবে। |
কুদ্দুস: কিন্তু বালাইনাশক ঠিকমতো না দিলে তো পোকা-মাকড়,
রোগবালাইয়ের উপদ্রব বাইড়া যাইব! |
কাট টু কাট রবিউল
কুদ্দুসকে বোঝাচ্ছে- এসময়
দেখবো, রবিউল নিজের জমিতে বালাইনাশক দেয়ার পূর্বে বালাইনাশকের পরিমাণ দেখছে এবং সঠিকভাবে
ছিটিয়ে দিচ্ছে। |
রবিউল: একবারে বন্ধ করতে তো কয় নাই। যতটুকু প্রয়োজন অতটুকুই দিতে
হইবে। প্রশিক্ষণের সময় কৃষি স্যার শিখাইছেন,
ফসলের ধরন অনুযায়ী সঠিকভাবে সঠিক পরিমাণ বায়োপেস্টিসাইড (বালাইনাশক) জমিতে ব্যবহার
করতে হবে। |
কুদ্দুস
রবিউলকে বলে, |
কুদ্দুস: আমার
জমিতে মনে হয় বালাইনাশক একটু বেশিই দেয়া হইছিল। পাশের বাড়ির মিনুর আদরের ছাগলটা সেদিন
ক্ষেতে আইসা পাতা খাইছিল, ঐটা শুনলাম এহন অসুস্থ। জমিতে
এইবার শক্ত কইরা বেড়া দিব। যাতে আমার কারণে কারও গরু-ছাগলের ক্ষতি না হয়। |
কাট টু রবিউল
নিজের হাতে থাকা কীটনাশক দেখিয়ে বলে, |
রবিউল: ঠিক ভাই।
পাশাপাশি বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে নিয়ম মেনে। সাবধানতা ছাড়া স্প্রে করলে এর থেকে নিজেদেরও হইতে
পারে মারাত্মক বিপদ! |
কাট টু কুদ্দুস
রবিউলের এপ্রোন দেখিয়ে বলে, |
কুদ্দুস: এই জন্যই কী তুই এই কাপড়, চশমা এগুলান পড়ছস?
|
কাট টু রবিউল
নিজের প্রতিরক্ষামূলক পোশাক দেখিয়ে বলে, |
রবিউল: হ ভাই, এইটারে বলে বালাইনাশক প্রতিরক্ষামূলক পোশাক!
এখন চলো তোমারে একটা জিনিস দেখাই! তবে তার আগে ভালো কইরা হাত ধুইতে হবে। এইসব হইতাছে বিষাক্ত
জিনিস। কোনোভাবে চোখেমুখে
গেলে বিপদ হইবার পারে।
|
কাট টু কাট কুদ্দুস
লক্ষ্য করে, রবিউল কীটনাশকের কৌটা ভালো করে তিনবার ধৌত করে এবং সেই ধৌত করা পানি
তার জমিতে ছিটিয়ে দেয়। এরপর রবিউল নখ, হাত সুন্দর করে পরিষ্কার করতে
থাকে। এসময় কুদ্দুস রবিউলকে উদ্দেশ্য করে বলে, |
কুদ্দুস: |
কাট টু কাট রবিউল
বলে, কথা
বলতে বলতে রবিউলের বাড়ির দিকে রওনা দেয় দু’জন। তাদের কথোপকথন চলতে থাকে। রবিউলের
হাতে কীটনাশকের কৌটা। |
রবিউল: ভাই,
ভুলটা তো ওইখানেই। প্রশিক্ষণের সময় শিখসি জমিতে কেবল সঠিকভাবে বালাইনাশক দিলেই হবে
না। এই বিষাক্ত ঔষধ যাতে কোনোভাবে আমাদের শরীরে যাইতে না পারে, ব্যবহারের পর হাত
ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। |
কাট টু হাঁটতে
হাঁটতে কুদ্দুস রবিউলকে বলে, |
কুদ্দুস: বুঝলাম! কিন্তু আমারে তহন বিষাক্ত এইসব বোতল,ব্যাগ
ঘরে রাখতে মানা কইরা এখন নিজেই কৌটাগুলো বাড়িত নিয়া যাইতেছস! এগুলারে অন্য কামে লাগাবি,
না? |
কাট টু রবিউলের
কথার সাথে সাথে বালাইনাশক যেভাবে মানুষ ও প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করে এবং ক্ষতি করে
এমন ইনফোগ্রাফিক দেখবো। |
রবিউল: না
ভাই! এসব আর ব্যবহার করা যাইবো না। আমরা ভাবি বেশি করে ধুয়ে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু
আসলে বালাইনাশক এভাবেই আমাদের শরীরের মইধ্যে ঢোকে। আবার খাবার গ্রহণ ও পানি পানের
মাধ্যমেও এই বিষ শরীরে ঢুকতে পারে। মানুষ ও গবাদি পশুপাখির তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা,
এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে এই বালাইনাশক। |
কাট টু কথা
বলতে বলতে রবিউল ও কুদ্দুস গিয়ে একটি চায়ের দোকানে বসে। রবিউল চা দিতে বলে। কুদ্দুস
জিজ্ঞাসা করে, |
রবিউল: দুইটা চা দেও তো! কুদ্দুস: পোড়াই দিয়াও তো লাভ নাই, ঠিক না? |
রবিউল
অবাক হয়ে কুদ্দুসকে উদ্দেশ্য করে বলে, |
রবিউল: ঠিক
ভাই। কিভাবে বুঝলা? |
কুদ্দুস
হাসে। এরপর রবিউলকে বলে, |
কুদ্দুস: সবই কী খালি তোরাই জানবি! আমি কিছু জানবো না? |
চায়ে
চুমুক দিয়ে কুদ্দুস আয়েশী ভঙ্গিতে আবার বলে, কুদ্দুসের
কথার সাথে সাথে কীটনাশকের কৌটা, বোতল পোড়ানোর
ফুটেজ দেখবো এবং ছবির উপর লাল ক্রস চিহ্ন থাকবে। |
কুদ্দুস: পোড়ানোর
ছাই মাটির সাথে মিশ্যা যায়। যা মাটির শক্তি নষ্ট করে। পরিবেশেরও ক্ষতি করে। একবার পোড়াই ছিলাম। গন্ধটা ভালো লাগে নাই। বাতাসে আছিল
কালা ধুয়া। কিন্তু বোতল, পলিব্যাগ তো কম না, কী করুম ঐটাও বুঝতাছিলাম না! |
কাট টু রবিউল
চা হাসিমুখে চা পান করতে করতে বলে, |
রবিউল: বাড়ি
চলো ভাই, সব বুইঝা যাবা। |
কাট টু কাট |
কুদ্দুস: এগুলোন আবার ফুটা করতাছিস ক্যান? |
এমন
সময় বাড়িতে প্রবেশ করে রবিউলের মেয়ে জায়েদা।জায়েদার পরনে কলেজ ড্রেস। সে বলে ওঠে,
|
জায়েদা: যাতে
পরে এই বিষের বোতল বা পলি ব্যাগ কেউ পুনরায় অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করতে না পারে।
|
কুদ্দুস
ও রবিউল দুজনেই তাকায়। কুদ্দুস অবাক হয়। জায়েদা আবার বলে, |
জায়েদা: কৃষি
স্যারের ক্লাসে আমরা শিখছি, পরিবেশ ও প্রাণীর জন্য বালাইনাশক কতটা ভয়াবহভাবে ক্ষতিকর।
এই বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য শুধু গবাদি পশু নয়, মানুষের শরীর, পানি, মাটি এমনকি বাতাসেও
প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে ছিদ্র করার সময় থাকতে হয় অনেক বেশি সতর্ক। এই সময়ে বালাইনাশকের
বিষ চোখ, মুখ, নাক এমনকি ত্বক দিয়েও আমাদের শরীরে ঢুকে যেতে পারে। |
কুদ্দুস
রবিউলের মেয়ে জায়েদার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। |
কুদ্দুস: তুই তো দেখি স্কুল-কলেজে গিয়া অনেক দরকারি জিনিস
শিখা ফালাইতাছস! |
জায়েদা পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে চাচাকে।
এদিকে রবিউল ছিদ্র শেষ করে বোতলগুলো নিয়ে বিনে রাখে। |
রবিউল: |
বাড়ির উঠোনে থাকা বালাইনাশক পাত্রের বিনের
ক্লোজ শট। কুদ্দুস বালাইনাশক পাত্রের বিন ভালো করে দেখে রবিউলকে জিজ্ঞাসা করে, |
কুদ্দুস: |
বিন অনেকটা ভরে উঠেছে। রবিউল কুদ্দুসকে
বলে, |
রবিউল: কিনি
নাই, ভাই। যেইখানে প্রশিক্ষণ নিছি, ওরাই দিছে বালাইনাশকের কৌটা, বোতল, পলি ব্যাগ
এগুলো জমানোর জন্য। |
জায়েদা
কুদ্দুসকে উদ্দেশ্য করে বলে, |
জায়েদা: এই
ময়লা ফেলার বিন বাড়িতে না থাকলেও সমস্যা নেই, চাচা। যাদের কাছ থেকে আপনারা বালাইনাশক
কিনেন, তাদের ওখানে আছে। আপনারা দোকানে গিয়া বালাইনাশকের খালি কৌটা, বোতল, পলি ব্যাগ
জমা দিলেই হবে। |
রবিউল বিন
দেখিয়ে বলে, রবিউল ও কুদ্দুস বেরিয়ে যায়। |
রবিউল: চলো
তাইলে ভাই, এইটা দিয়ে আসি। |
কাট টু কাট |
শাহ আলম: সাথে
কুদ্দুস ভাই যে! আপনিও তাহলে পরিবেশ বান্ধব উপায়ে বালাইনাশক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শিখে
ফেললেন। |
কুদ্দুস
শাহলমকে বলে, |
কুদ্দুস: দরকারি জিনিস যত তাড়াতাড়ি শিখে ফেলা যায়, ততই তো
ভালো! |
কাট টু এর
মাঝেই দেখা যায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গাড়ি দোকানের সামনে এসে দাড়ায়। শাহ আলম কুদ্দুসকে গাড়িটা দেখিয়ে বলে- |
শাহ আলম: খাঁটি
কথা! এই যে গাড়ি দেখতেছো, এতে কইরাই এসব বর্জ্য পরিবেশবান্ধব উপায়ে পোড়ানোর জন্য নেয়া
হবে এবং পোড়ানো ছাই নিরাপদে নিষ্পত্তি করা হবে। |
ততক্ষণে
গাড়ির স্টাফ বা কোম্পানির প্রতিনিধি গাড়ি থেকে নেমে শাহলমের দোকানে থাকা বালাইনাশক
বিন গাড়িতে উঠিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যায়। কুদ্দুস তা দেখে বলে, এর মাঝেই বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে মাইকিং শোনা যায়। |
কুদ্দুস: বাপরে!
সত্যই আইজ অনেক কিছু দেখলাম আর শিখলাম! এসবের
কিছুই তো জানতাম না। কুদ্দুস: মাইকিংও হইতেছে দেখি! |
রবিউল কুদ্দুসকে বলে, |
রবিউল: হ
ভাই! যেই স্যারদের কাছে প্রশিক্ষণ নিছি, তারাই সবাইরে জানানোর জন্য এই ব্যবস্থা করছে।
|
কুদ্দুস জিজ্ঞাসু ভঙ্গিতে বলে, |
কুদ্দুস: তুই যে বারবার প্রশিক্ষণের কথা বলতেছিস, কীসের প্রশিক্ষণ?
|
কাট টু কাট রবিউল বলবে- এসময়
বাংলাদেশ সরকার ও FAO-এর ট্রেনিং সেশনের বিভিন্ন ফিলার শট দেখা যাবে। |
রবিউল: বাংলাদেশ সরকারের সাথে জাতিসংঘের
খাদ্য ও কৃষি সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই বালাইনাশকের সঠিক ব্যবহার, এর প্রভাব ও ঝুঁকির
ব্যাপারে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করতেছে। যার অংশ হিসাবে আমিসহ আরও অনেকেই এই প্রশিক্ষণে
অংশ নেই, এবং এইসব শিখছি। |
কুদ্দুস
ও রবিউল ততক্ষণে শাহ আলমের দোকান থেকে বেরিয়ে এসেছে। কুদ্দুস রবিউলকে বলে, |
কুদ্দুস: সরকারের সাথে অনেকেই তো অনেক
কিছুই করতেছে। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যদি নিজেরা সচেতন না হইতে পারি,
বিপদ বাড়বে আমাদেরই। |
কুদ্দুসের
চোখেমুখে আত্ম পরিবর্তনের প্রচেষ্টা। রবিউল খুশি হয় এবং কুদ্দুসকে বলে, |
রবিউল: এদম ঠিক ভাই। বালাইনাশকের উপর
নির্ভরতা কমাতে হবে সবার আগে। এতে কৃষক পরিবারের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, জমিও শক্তি
পাবে। |
কাট টু কুদ্দুস
আগ্রহী ভঙ্গিতে রবিউলকে বলে, |
কুদ্দুস: চল, গ্রামে নিজেরাই একটা দল
বানাই - ‘সতর্ক কৃষক দল’। আমরা একে অপরকে শেখাবো কীভাবে নিরাপদ চাষের মাধ্যমে পরিবার
নিয়ে সুস্থ থাকা যায়। |
রবিউল কুদ্দুসকে
বলে, |
রবিউল: দারুণ
আইডিয়া ভাই। এটা হবে উঠান আলোচনা। যাতে সব বয়সী কৃষক ও পরিবারের সদস্যরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে সতর্ক হতে পারে। |
কুদ্দুসের চোখে মুখে পরিবর্তনের উৎসাহ।
সে বলে, |
কুদ্দুস: জায়েদাকেও সঙ্গে রাখতে হবে। ওর
শিক্ষাগুলো নতুনদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে ও পরিবর্তনে রাখবে। |
লোগো, নেমোনিক ও ট্যাগলাইন আসবে। |
|
No comments:
Post a Comment